গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন (গত বছরের ৫ আগস্ট) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিতে প্রাণ হারান মো. হাসান (১৯)। এরপর ছয় মাসের বেশি সময় তাঁর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল। গত বুধবার তাঁর মরদেহ শনাক্ত করে পরিবার। এরপর থেকে হাসানের মা গোলেনুর বেগমের মায়ের কান্না যেন থামছেই না।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে হাসানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ পরিবারের কাছে তুলে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সন্তানের মরদেহ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসানের মা গোলেনুর বেগম। এ সময় পাশেই ছিলেন তাঁর বাবা মো. মনির হোসেন। অশ্রুজড়িত কণ্ঠে ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন তিনি।
মনির হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে ৫ আগস্ট হারিয়ে যায়। পরে তাকে আমরা প্রায় সব হাসপাতাল, ক্লিনিক, কবরস্থান, আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামসহ আমাদের পক্ষ যত জায়গায় যাওয়া সম্ভব, সবখানে খুঁজেছি কিন্তু কোথাও তাকে পাইনি। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যাই এবং কাপড়চোপড় দেখে ছেলেকে শনাক্ত করি।’
ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে মনির হোসেন আরও বলেন, ‘আমি চাই আমার মতো কোনো বাবাকে যেন এভাবে তার সন্তান না হারাতে হয়। আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।’ হাসানের খালা মোছা. শাহিনুর বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকারের কাছে ভাগনে হত্যার বিচার চাই। তাদের পরিবারের সে ছিল আয়ের অন্যতম উৎস। তাকে ছাড়া তার বাবা–মা কীভাবে বেঁচে থাকবে?’
রাজধানীর কাপ্তানবাজারে একটি দোকানে কাজ করতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলায়। তাঁর বাবা জানালেন, শনিবার সকালে দ্বিতীয় জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জানাজা পড়ে শহীদ হাসানের কফিন নিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘কফিনমিছিল’ বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment