www.chini24.online

www.chini24.online detailed reporting and presentation of information about current events, issues, or stories.

Subscribe Us

Saturday, 8 February 2025

আম্মার ভয়ে প্রেম করিনি, এখন আম্মাই বলে, তুমি খুঁজে আনো

 

ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

প্রশ্ন: আমার বয়স ৩৫। ভালো চাকরি করি। পারিবারিক অবস্থাও ভালো। কিন্তু ইদানীং হতাশ হয়ে পড়ছি। কারণ, আমার বয়সী বন্ধুবান্ধব, কাজিন, প্রায় সবার বিয়ে হয়ে গেছে। আমার হচ্ছে না। ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করার পর সব সময় ভেবেছি আগে ক্যারিয়ারটা দাঁড় করাই, তারপর বিয়ে করব। নিজের দায়িত্ব যদি নিতে না পারি, আরেকজনের দায়িত্ব নেব কীভাবে। ক্যারিয়ারে ফোকাস করতে করতেই আসলে সময় চলে গেছে। এখন আর বিয়ের জন্য মেয়ে পাওয়া যাচ্ছে না। বয়স ৩৫ শুনলেই মেয়েপক্ষ মনে করে ছেলের কোনো না কোনো সমস্যা আছে। হয়তো আগে বিয়ে হয়েছে, কিংবা অন্য কিছু।
সারা জীবন আম্মার ভয়ে প্রেম করতে পারিনি। এখন আম্মাই বলে, ‘তুমি খুঁজে আনো।’ আমি কোথা থেকে খুঁজে আনব? এখন তো আর সামনাসামনি বা অনলাইনে মেয়েদের সঙ্গে ফ্লার্ট করার বয়স নেই। বাধ্য হয়ে বন্ধুবান্ধব, অফিসের কলিগদেরও বলেছি, আমার জন্য মেয়ে দেখতে। কেউ কেউ চেষ্টা করছে। কিন্তু আশপাশের অধিকাংশ মানুষই কেন যেন ব্যাপারটাকে ‘ফান’ মনে করে। অনেকে টিটকারি দেয়। দেখা হলেই খোঁচা মেরে কথা বলে।


আরও পড়ুন

‘অনেক চাকরি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি না’

‘অনেক চাকরি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি না’

এ জন্য এখন আর পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে যেতে চাই না। আমি তো যাই-ই না, আম্মাও যেতে চান না। আমি বুঝি, আম্মাও আসলে কষ্ট পাচ্ছেন। আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে তাঁকেও নানা রকম কথা শুনতে হয়।
সব মিলিয়ে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস একদম হারিয়ে ফেলেছি। কাজে মন দিতে পারি না। সবাইকে এড়িয়ে চলতে ইচ্ছা হয়। রাতে ঘুম হয় না। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকি। ফেসবুক, ইউটিউব, সিনেমা—কোনো কিছুই দেখতে ইচ্ছা করে না। খেতে ইচ্ছা করে না। বাসার মানুষজনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অকারণেই রাগ দেখাই। এমনও হয়, টানা এক সপ্তাহও বাসায় কিছু খাই না। কারণ, সবার সঙ্গে খেতে বসলেই বিয়ের আলাপ উঠবে।
দুনিয়ার সবকিছু অসহ্য লাগে। ইচ্ছা করে সব ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যাই। আমি জানি না কার কাছে সাহায্য চাইব। কিংবা সাহায্য করার মতো আদৌ কেউ আছে কি না।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা

উত্তর: আপনার কষ্টকর সময়ের কথাগুলো নিজের ভেতরে আবদ্ধ করে না রেখে আমাদের কাছে লেখার জন্য ধন্যবাদ। এটি নিজের প্রতি যত্ন ও দায়িত্বশীলতারই প্রকাশ। আপনি বলেছেন, ‘ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করার পর সব সময় ভেবেছি আগে ক্যারিয়ারটা দাঁড় করাই, তারপর বিয়ে করব। নিজের দায়িত্ব যদি নিতে না পারি, আরেকজনের দায়িত্ব নেব কীভাবে।’ এই মুহূর্তে আপনার নিজের এই ভাবনার জন্য নিজেকে খানিকটা দোষী মনে হলেও আপনার ভাবনাটি কিন্তু অযৌক্তিক ছিল না। বিয়ে নিঃসন্দেহে একটি বড় দায়িত্ব। জীবনের বিশাল এক পরিবর্তনও বটে।
আমরা যখন কোনো একটি বাধা বা সমস্যার মুখোমুখি হই, তখন আমরা আবেগীয়ভাবে কেমন বোধ করব, বা সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করব, তা মূলত নির্ভর করে নিজের সম্পর্কে আমাদের সামগ্রিক ধারণা এবং সামাজিক সহযোগিতার ওপর। সংকটের সময় নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা বা ধারণা আমাদেরকে আরও দুর্বল করে দেয়। সংকটকালীন সময়ে তাই নিজের প্রতি সদয় থাকা, নিজেকে মমতা মাখানো কথা বলা জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, যখন কষ্ট হবে তখন গভীরভাবে কয়েকটি শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে আপনি নিজেকে বলতে পারেন, ‘এই মুহূর্তে আমি কষ্টে আছি, মানসিক চাপে আছি। এই সময়টা কেটে যাবে। আমি একা নই। আমাদের সবার জীবনেই দুঃখ থাকে, সমস্যা থাকে। আমি নিজের প্রতি সদয় থেকেই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে পারি। আমি ধৈর্য ধরতে পারি, আমি শক্তিশালী হতে পারি।’ গবেষণায় দেখা গেছে, নিজের প্রতি ইতিবাচক ও মমতাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মানসিক শক্তি জোগায় এবং সমস্যা সমাধানের জন্য মস্তিষ্ককে প্রস্তুত করে।



আরও পড়ুন

কিডনি ভালো রাখবে সকালের এই ৫ অভ্যাস

কিডনি ভালো রাখবে সকালের এই ৫ অভ্যাস

আপনার বয়স ৩৫ কিন্তু এখনো অবিবাহিত, নানা মানুষ নানা কথা বলছে, ফলে আপনি একধরনের সংকোচ ও লজ্জার অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনি কি মূলত এই সংকোচ ও লজ্জা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই বিয়েকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? নাকি জীবনের সুখ–দুঃখগুলোকে ভাগ করে নেওয়ার জন্য, জীবনকে উদ্‌যাপন করার জন্য একজন সঙ্গী প্রয়োজন বলেই বিয়েকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? নিজেকে প্রশ্ন করুন। যদি প্রথমটি আপনার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে বয়সকে বড় বাধা মনে হতে পারে। কিন্তু যদি দ্বিতীয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে বয়স বড় কোনো বাধা হওয়ার কথা নয়। যেকোনো বয়সেই মানুষ পছন্দের একজন মানুষের সঙ্গে জীবন শুরু করতে পারে।
আপনি বিয়ের ব্যাপারে সহকর্মী ও বন্ধুদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন, এটি খুব ইতিবাচক একটি বিষয়। কেননা আমাদের জীবনে যা কিছু প্রয়োজন, তা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে করা আমাদেরই দায়িত্ব। আর সামাজিকভাবে বা কিছু বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে আপনি যে বিদ্রূপের মুখোমুখি হচ্ছেন, তা-ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামলে নেওয়া প্রয়োজন। নিজেকে গুটিয়ে না রেখে প্রকাশ করা প্রয়োজন। আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অন্য কারও মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন ও অনধিকার চর্চা মনে হলে আমরা সরাসরি তা বলে দিতে পারি। নিজের প্রতি সদয় ও শ্রদ্ধাশীল থাকা, আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজেকে প্রকাশ করতে পারা, সমস্যা সমাধান করা, অন্যের যেকোনো আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারার জন্য আমাদের মানসিক ও আবেগীয় বিকাশ এবং যোগাযোগের দক্ষতা প্রয়োজন হয়। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ বা আত্ম উন্নয়নমূলক বই সে ক্ষেত্রে সহযোগী ভূমিকা পালন করতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Search This Blog

About Us

About Us
Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's.

Editors Choice

3/recent/post-list