www.chini24.online

www.chini24.online detailed reporting and presentation of information about current events, issues, or stories.

Subscribe Us

Sunday, 23 February 2025

আইপিও খরায় শেয়ারবাজার

 

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) খরায় ভুগছে দেশের শেয়ারবাজার। গত ১০ মাসে কোনো বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে কোনো কোম্পানির আইপিও আবেদন জমা পড়েনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)।

সবশেষ যে আইপিও আবেদনটি জমা পড়েছে, তাও গত বছরের এপ্রিলে। ঢাকা-থাই এলকোম্যাক্স নামে ওই কোম্পানির আইপিও আবেদন জমা দিয়েছিল প্রাইম ইনভেস্টমেন্ট। কোভিড-১৯ মহামারির সময় ছাড়া এত দীর্ঘ সময় ধরে আইপিও আবেদন জমা না পড়ার ঘটনা বিরল বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাজেদা খাতুন আমার দেশকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইস্যু কোম্পানিগুলো (যারা বাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করবে) কিছুটা ওয়েট অ্যান্ড সি পলিসি অনুসরণ করছে। পুঁজিবাজার নিয়ে টাস্কফোর্স কাজ করছে এবং টাস্কফোর্স আইপিও নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ণের কাজ করছে। সেজন্য অনেকে ওই নীতিমালার অপেক্ষায় রয়েছে।

এ ছাড়া রাজনৈতিক সরকার না থাকায় অনেকে নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী না হওয়ায়ও আইপিও আবেদন জমা পড়ছে না। সম্প্রতি কয়েকটি কোম্পানির আইপিও আবেদন বিএসইসি নাকচ করে দেওয়ায় নতুন ইস্যু আনার ক্ষেত্রে ইস্যুয়ারদের মধ্যে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, আইপিও হচ্ছে শেয়ারবাজারের ‘রক্ত সঞ্চালন’-এর মতো। এটি যদি না থাকে তাহলে বাজারে গতি ফিরবে কিভাবে? এমনিতেই বর্তমানে বিনিয়োগযোগ্য কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম। ফলে বাজারে ভালো কোম্পানির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এখন কেন কোম্পানিগুলো বাজারে আসতে চাইছে না, এ নিয়ে বিএসইসির উচিত সব অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন ও অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম যখন বিএসইসির চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন বাজারে অনেক দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছিল। এসব দুর্বল কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে কমিশনের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক চাপেও কিছু কোম্পানির তালিকাভুক্তি ঘটে।

এসব দুর্বল কোম্পানির কারণে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে শেয়ারাজারে তালিকাভুক্ত ৩৮৪টি কোম্পানির মধ্যে ১০২টি দুর্বল জেড ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি দুর্বল কোম্পানি। এর মধ্যে খায়রুল হোসেন ও শিবলী রুবাইয়াত কমিশনের আমলে অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর ৩৫ শতাংশই দুর্বল কোম্পানির তালিকায় নাম লিখিয়েছে।

দুর্বল কোম্পানির তালিকাভুক্তির কারণে বড় ধরনের সমালোচনা তৈরি হলে এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের কারণে আইপিও আবেদন একপ্রকার বন্ধই বলা যায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে বিএসইসিতে নতুন নেতৃত্ব আসার পর বেশ কয়েকটি কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করা হয়।

এর মধ্যে বোরাক রিয়েল এস্টেট ও মাস্টার ফিড কোম্পানির আইপিও বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া দুয়ার সার্ভিসেস নামে একটি কোম্পানির কিউআইও স্থগিত করেছে বিএসইসি। কোম্পানির আইপিও প্রস্তাব বাতিল করার প্রভাবেও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো নতুন ইস্যু আনার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বলে মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকতারা জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা আমার দেশকে বলেন, একটি কোম্পানিকে বাজারে নিয়ে আসতে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই বছর কাজ করতে হয়। তারপর কোম্পানির আইপিও আবেদন জমা দেওয়ার পর সেটি বাতিল হয়ে গেলে কেউ কাজ করতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক।

নানান সুযোগে দুর্বল কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির জন্য কোনো প্রণোদনা নেই। তাহলে তারা কেন আসবে- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোম্পানিগুলোর অর্থায়নের কোনো নীতিমালা নেই।

ফলে যেসব কোম্পানি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জর্জরিত হয়ে পড়েছে এবং মুনফাও করতে পারছে না, তখন কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসে। এ ধরনের প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে হবে। তাহলে বাজারে আস্থা ফিরবে।

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Search This Blog

About Us

About Us
Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's.

Editors Choice

3/recent/post-list